সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সুন্নতি সামগ্রীর অনুকরণে কিছু সুন্নতি সামগ্রীর ছবি (সংক্ষিপ্ত বর্ণনাসহ)
by CHATRO ANJUMAN DINAJPUR
|
posted: 7:55 PM
|
0
comments
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আমার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব)
আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলেদিন, যদি তারা আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত লাভ করতে চায় তাহলে তারা যেনো আপনার অনুসরণ করে, তাহলে আমি আল্লাহ পাক স্বয়ং তাদেরকে মুহব্বত করবো, তাদেরকে ক্ষমা করবো, তাদের প্রতি দয়ালু হবো; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সুরা আল ইমরান/১৩১)
সুন্নতের ফযীলত সম্পর্কে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে মুহব্বত করলো, সে মূলতঃ আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে আমাকে মুহব্বত করবে, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযী শরীফ)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, আখিরী যামানায় যে ব্যক্তি একটি সুন্নত আঁকড়ে ধরে থাকবে তথা আমল করবে তাকে এর বিনিময়ে একশত শহীদ এর ছওয়াব প্রদান করা হবে।
সুন্নতি পাগড়ি মুবারক:
পাগড়ীর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: পাগড়ী পরিধান করা দায়েমী
সুন্নত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি সর্বদা পাগড়ী মোবারক পরিধান করতেন। তিনি ঘরেও পাগড়ী মোবারক
পরিধান করতেন। মক্কা শরীফ বিজয়ের সময়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মোবারক-এ কাল পাগড়ী মোবারক
ছিল। উনার পাগড়ী মুবারক-এর নিচে এবং পাগড়ী মুবারক ব্যতীত শুধু টুপিও
ব্যবহার করেছেন।ফজিলত: পাগড়ী সম্বন্ধে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “মানুষ যখন পাগড়ী পরা ছেড়ে দিবে, তখন তাদের থেকে দ্বীন চলে যাবে।”
অন্যত্র ইরশাদ ফরমান, “পাগড়ী বাঁধ, যা ইসলামের নিদর্শন, মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যকারী।”
পাগড়ী পরে নামাজ পড়লে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব লাভ করা যায়। (শামায়েলে তিরমিযী, সিহাহ্ সিত্তাহ্, মিরকাত, মাদারেজুন নুবুওওয়ত, সিরাতুন নবী, জামউল ওসায়েল ইত্যাদি।
পরিমাপ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিকাংশ সময় যে পাগড়ী মোবারক ব্যবহার করতেন তা ছিল সাত হাত লম্বা। ঘরের মধ্যে ব্যবহার করতেন তিন হাত এবং ঈদ, জুমুয়া ও দূতদের জন্যে ব্যবহার করতেন ১২ হাত লম্বা পাগড়ী মোবারক। (আদাবুন নবী)
রং: হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কালো, সবুজ, সাদা, ধূসর ইত্যাদি বিভিন্ন রংয়ের পাগড়ী মোবারক পরিধান করতেন। তবে কালো পাগড়ী মোবারকই বেশী ব্যবহার করতেন। (শামায়েলে তিরমিযী, জামউল ওসায়েল ও সীরত গ্রন্থসমূহ)
সিমলা: সিমলা ১ বিঘত থেকে ১ হাতের মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং তা দু’কাঁধের মধ্যখানে ঝুলিয়ে রাখা উত্তম। তবে কখনো বা সম্মুখ ভাগের ডান দিকে ঝুলিয়ে রাখাও দুরস্ত আছে। (শামায়েলে তিরমিযী, জামউল ওসায়েল)
সুন্নতি টুপি মুবারক :
টুপির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:মহান আল্লাহ্ পাক, হযরত জিবরীল
আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জান্নাত হতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে টুপি মোবারক পরিধান করার
জন্য হাদীয়া করেছিলেন, তা ছিল চার টুকরা বিশিষ্ট এবং গোল। এর উপরিভাগে এক
টুকরা এবং চারদিকে তিন টুকরা দ্বারা বেষ্টিত, যা সাদা, সূতী এবং মাথার সাথে
লেগে থাকে। তা পরিধান করা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। (দলীল: তিরমিযী,
মেশকাত, মেরকাত, ইসরারুল আওলিয়া, আনিসুল আরওয়াহ্, দলিলুল আরেফীন)টিকা: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনো কিস্তি, পাঁচ কুল্লি, চোক্কা বা উঁচু টুপি পরিধান করেননি।
এমনকি এর পক্ষে কেউ কোন প্রমাণও পেশ করার যোগ্যতা রাখে না এবং এসব টুপি পরিধান করা মাকরূহ্।
(আলমগীরী, এতাবীয়া)
গুটলি বিশিষ্ট, কোনা বন্ধ সুন্নতি কোর্তা মুবারক:
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নেছ্ফুসাক্ব বা কোর্তা
মোবারক পরিধান করতেন, যা হাঁটু ও গিরার মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা ছিল এবং
আস্তিন কব্জি পর্যন্ত বিলম্বিত। তা গুটলি যুক্ত, কোনা বন্ধ (গোল)। তিনি
সাদা এবং (মিশরীয়) সূতী বেশী পছন্দ করতেন। তবে অন্যান্য রংয়ের কোর্তাও
পরিধান করতেন।(বোখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ ও নাসাঈ শরীফ)টিকা – হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে কখনো কোনা ফাঁড়া কোর্তা বা পাঞ্জাবী পরিধান করেননি।
যা বর্তমান কালের অনেক আলেম নামধারী লোকেরা পরে থাকে। মূলতঃ এটা দলীল-প্রমাণবিহীন, স্রেফ মনগড়া আমল মাত্র। এমনকি তিনি কখনো গেঞ্জিও পরিধান করেননি।
কালো রং-এর সুন্নতি জুব্বা মুবারক:
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদ, জুমুয়া এবং বিশেষ
বিশেষ অনুষ্ঠানে জুব্বা মোবারক পরিধান করতেন। যার জেব এবং আস্তিনের উপর এমন
কি নিম্নাংশেও সুক্ষ্ম রেশমের কারুকার্য ছিল।(তিরমিযী, আবূদাউদ শরীফ ও সীরত গ্রন্থসমূহ)
টিকা ঃ- আল্লাহ্র হাবীব, হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় মুজিব কোর্ট, ওয়েষ্ট কোর্ট, শেরওয়ানী ইত্যাদির প্রচলন ছিলনা, এগুলো স্পষ্টতই বিদ্য়াতের অন্তর্ভূক্ত।